বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের ব্যবহার প্রতিদিন বাড়ছে। অফিসযাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী, গ্রাম বা শহর—সবখানেই এই বাহনটি জনপ্রিয়। তবে অধিকাংশ মোটরসাইকেল চালকের এক সাধারণ প্রশ্ন মোটরসাইকেলের জন্য অকটেন ভালো, না পেট্রোল? আবার কেউ কেউ দুইটা একসঙ্গে মিশিয়েও ব্যবহার করেন। এই বিভ্রান্তি দূর করতেই আজকের এই প্রতিবেদন।
অকটেন ও পেট্রোল: কী পার্থক্য?
পেট্রোল (Regular Fuel): এটি সাধারণত ৮৭ অকটেন রেটিংয়ের হয়। স্বাভাবিক ইঞ্জিনের জন্য উপযুক্ত। দাম তুলনামূলক কম।
অকটেন (Octane/Octane Booster Fuel): সাধারণ পেট্রোলের চেয়ে উন্নত ও পরিশোধিত। অকটেন রেটিং সাধারণত ৯১ বা তার বেশি। হাই পারফরম্যান্স ইঞ্জিনের জন্য তৈরি।
মোটরসাইকেলের জন্য কোনটা ভালো?
এটি নির্ভর করে আপনার বাইকের ইঞ্জিনের ধরন ও নির্মাতার সুপারিশের ওপর।
সাধারণ বাইক (১০০–১৫০ সিসি)
এসব বাইকের ইঞ্জিন কম্প্রেশন রেশিও কম হয় (৯:১ বা তার কাছাকাছি)।
এ ধরনের ইঞ্জিনে সাধারণ পেট্রোলই যথেষ্ট। অকটেন ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।
বরং অপ্রয়োজনে অকটেন ব্যবহারে অতিরিক্ত খরচ ও কিছুক্ষেত্রে ইঞ্জিনে ক্ষতিও হতে পারে।
স্পোর্টস বাইক / হাই-পারফরম্যান্স বাইক (১৫০–৩২১ সিসি বা তার বেশি)
এই বাইকগুলোর ইঞ্জিন কম্প্রেশন রেশিও অনেক বেশি (১০:১ বা তার বেশি)।
এতে অকটেন ব্যবহারে ভালো পারফরম্যান্স পাওয়া যায়, ইঞ্জিনের শব্দ কমে এবং ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয় না।
এমনকি কিছু স্পোর্টস বাইকের ম্যানুয়ালেই অকটেন ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
অকটেন ব্যবহারের ভুল ধারণা
অনেকে মনে করেন, অকটেন মানেই ‘ভালো জ্বালানি’, যেকোনো বাইকে দিলে পারফরম্যান্স বেড়ে যাবে। এটি একটি ভুল ধারণা। ইঞ্জিনের ধরন যদি কম কম্প্রেশন হয়, তাহলে অকটেন কোনো বিশেষ উপকার করে না—বরং খরচ বাড়ায়।
অকটেন-পেট্রোল মিশিয়ে ব্যবহার করা ঠিক কি?
কেউ কেউ ৫০% অকটেন ও ৫০% পেট্রোল মিশিয়ে চালান। এটি নিয়মিতভাবে করা বাঞ্ছনীয় নয়, কারণ:
এতে ফুয়েল কম্বাশনে সমস্যা হতে পারে।
ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা ও আয়ুষ্কাল কমে যেতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদে এটি ক্ষতিকর হতে পারে।
কী করবেন?
আপনার বাইকের ইউজার ম্যানুয়ালে কী ধরনের ফুয়েল সুপারিশ করা আছে, সেটি অনুসরণ করুন।
সাধারণ কম সিসি বাইকের জন্য সাধারণ পেট্রোলই যথেষ্ট।
স্পোর্টস বা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বাইকের জন্য নির্মাতার সুপারিশ থাকলে অকটেন ব্যবহার করুন।
সঠিক বাইকে সঠিক জ্বালানি ব্যবহার করলেই পারফরম্যান্স ভালো থাকবে। অপ্রয়োজনীয়ভাবে অকটেন ব্যবহার করলে খরচ বাড়ে এবং ইঞ্জিনের ওপর চাপ পড়ে। তাই বাইকের সিসি, ইঞ্জিনের ধরন ও নির্মাতার সুপারিশ অনুযায়ী জ্বালানি নির্বাচন করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
সুত্রঃ ঢাকা মেইল