হর্ষবর্ধন জৈন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভারতে ভুয়া দূতাবাস খুলে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। গাজিয়াবাদে দীর্ঘ আট বছর ধরে ভুয়া দূতাবাস চালানো এই ব্যক্তির রয়েছে একাধিক বিদেশি অ্যাকাউন্ট। ১০ বছরে ১৬২ বার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন তিনি। এছাড়া প্রতারণার মাধ্যমে হর্ষবর্ধন প্রায় ৩০০ কোটি রুপি আয় করেছেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। খবর এনডিটিভির।
ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, গত সপ্তাহে ভারতের গাজিয়াবাদের একটি দুই তলা ভবন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ভবনটিকে দূতাবাস হিসেবে ব্যবহার করছিলেন তিনি। যেখানে গ্র্যান্ড ডাচি অব ওয়েস্টার্কটিকা এবং এইচ ই এইচভি জেইন অনারারি কনসাল লেখা ছিল। ভবনটির সামনেই ভারত ও ওয়েস্টার্কটিকার পতাকা উড়ছিল। করা হয়।
উত্তরপ্রদেশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) হর্ষবর্ধনকে ধরতে ওই ভবনে অভিযান চালায়। অভিযানকালে ভুয়া কূটনৈতিক নম্বর প্লেটসহ চারটি গাড়ি জব্দ এবং লাক্সারি ঘড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
আগামীকাল সোমবার হর্ষবর্ধনকে আদালতে তোলা হবে। পুলিশ বলেছে, তিনি প্রায় ৩০০ কোটি রুপির কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকতে পারেন।
তদন্তকারীদের ধারণা, জৈন পরিচিতি বাড়ানোর জন্য ছদ্মবেশ ধারণা করে এই কাজ করেন। বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মানুষকে ফাঁদে ফেলতেন।
তদন্তে আরও জানা গেছে, এই ভুয়া দূতাবাসটি ২০১৭ সাল থেকে চালু ছিল। দূতাবাসের বাইরে একাধিক সামাজিক কাজসহ দাতব্য কার্যক্রম আয়োজন করতেন, যেন সবকিছু সত্যি মনে হয়। তিনি ছয় মাস আগে এই ভবনটি ভাড়া নেন, যদিও প্রায় আট বছর ধরে তিনি এই ভুয়া দূতাবাস পরিচালনা করছিলেন।
মার্কিন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ট্র্যাভিস ম্যাকহেনরি ২০০১ সালে ওয়েস্টার্কটিকা নামে একটি মাইক্রোনেশন (ক্ষুদ্র জাতিরাষ্ট্র) প্রতিষ্ঠা করেন এবং নিজেকে এর গ্র্যান্ড ডিউক হিসেবে ঘোষণা দেন।
অ্যান্টার্কটিকায় অবস্থিত ওয়েস্টার্কটিকার আয়তন ৬ লাখ ২০ হাজার বর্গমাইল। অ্যান্টার্কটিক চুক্তি ব্যবস্থার একটি ফাঁকফোকর ব্যবহার করে ম্যাকহেনরি নিজেকে এই অঞ্চলের শাসক ঘোষণা করেন। চুক্তিতে দেশগুলোর জন্য অ্যান্টার্কটিকার অংশ দাবি নিষিদ্ধ করা হলেও, অনুগতশীল ব্যক্তিদের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
এদিকে ওয়েস্টার্কটিকা জানিয়েছে, ‘হর্ষবর্ধন জৈনকে আমাদের সংগঠনের প্রতিনিধি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। আমাদের নির্বাহী দল বিষয়টি আরও তদন্ত করে দেখছে এবং যারা জৈনের দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন, তাদের প্রতি আমাদের সমবেদনা রইল। আমরা ভারতের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে পুরোপুরি সহযোগিতা করব।’