কুষ্টিয়া পোস্ট ডেস্কঃ
পদ্মা ও মেঘনায় ২২ দিনের জন্য ইলিশসহ সবধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার (১২ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা চলবে। এ সময় দেশব্যাপী ইলিশ পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে। একইসঙ্গে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়ন করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মেঘনা নদীর ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর হয়ে চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেরা নদীতে নামতে পারবেন না। এ সময়ে ইলিশ মাছ আহরণ ও বিক্রি করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানাসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এদিকে, পদ্মা-মেঘনা পাড়ের অর্ধ লক্ষাধিক জেলে জাল-নৌকা তীরে উঠিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নিষেধাজ্ঞাকালে পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। জেলেদের সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তার দাবি জানান তারা।
রায়পুরের চরবংশী ইউনিয়নের মেঘনা পাড়ের নাইয়াপাড়া এলাকারা মোস্তফা বেপারী বলেন, ‘কিছু কিছু জেলে সরকারি আদেশ মানেন না। ২২ দিন মাছ ধরতে পারবো না- কিন্তু পরিবার নিয়ে কীভাবে দিন কাটে সে খবর কেউ রাখে না। আমাদের যে চাল দেয় সেটি দিয়ে কিছুই হয় না। চালের সঙ্গে আনুষঙ্গিক জিনিস লাগে। সে খরচ কীভাবে পাবো?’
জেলে মাইনুদ্দিন বলেন, ‘ধার-দেনা ও কিস্তির টাকা দিয়ে আমাদের সংসার চালাতে হয়। ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারি না। আমাদের দুশ্চিন্তার কথা কেউ ভাবে না। যার কারণে অনেক জেলে বাধ্য হয়েই নদীতে নামে। আমরা সরকারি চাল চাই না।’
চাঁদপুরের নদীকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আবু কাউছার দিদার বলেন, ‘বিগত বছরের মতো এবারও ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ রয়েছে।’
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাজিব চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘এ বছর ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে পালিত হবে। নিষেধাজ্ঞাকালে কোনও জেলে নদীতে নামলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন জেলার ৩৯ হাজার ৭৫০ জেলে পরিবারের মাঝে ৯৯৩.৭৫০ টন ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে সদরে তিন হাজার ৭৫০ জনকে ১৪৩.৭৫ টন, রামগতিতে ১৭ হাজার জেলেকে ৪২৫ টন, কমলনগরে ১১ হাজার ২০০ জনকে ২৮০ টন ও রায়পুরে পাঁচ হাজার ৮০০ জেলেকে ১৪৫ টন চাল দেওয়া হবে। যদিও লক্ষ্মীপুরে ৫৪ হাজার ৬০ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। এর মধ্যে সদরে সাত হাজার ৭২৯ জন, রামগতিতে ২৫ হাজার ৯১, কমলনগরে ১২ হাজার ৯৩৮ এবং রায়পুরে সাত হাজার ৬৯৮ জন জেলে আছেন।