সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০২:২০ অপরাহ্ন
রংপুর প্রতিনিধিঃ
রংপুর সদর উপজেলার চন্দনপাঠ ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রামে একটি গভীর নলকূপ দিয়ে গরম পানি উঠছে। এ ঘটনায় গ্রামজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
নিরাপদ ও ঠান্ডা খাবার পানির জন্য বসানো হয়েছিল সাব-মার্সিবল পাম্প। অথচ, ওই গভীর নলকূপ চালু করলেই উঠছে গরম পানি।
চা বানানোর জন্য পানি যতটুকু গরম হওয়া দরকার, সেরকম গরম পানি উঠছে ওই গভীর নলকূপ দিয়ে। নলকূপটি দেখতে গ্রামের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভিড় জমাচ্ছেন এর মালিক শফিউল আলম বাবুর বাড়িতে।
এলাকাসী জানিয়েছেন, আশপাশের অগভীর টিউবওয়েলগুলোতে কিছুক্ষণ চাপ দিয়ে পানি বের করতে থাকলে হালকা গরম পানি পাওয়া যায়।
তবে, বাবুর সাব- মার্সিবল পাম্পের পানি ব্যতিক্রম। কী কারণে ওই নলকূপ থেকে গরম পানি বের হচ্ছে, তা এখনো জানা যায়নি।
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে ওই গ্রামে গিয়ে জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে শফিউল আলম বাবুর বাড়িতে নিরাপদ ও সুপেয় পানির জন্য ৫৪৫ ফিট গভীর একটি সাব-মার্সিবল গভীর নলকূপ স্থাপন করে সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস।
কয়েকদিন ঠান্ডা পানি ওঠার পর ওই টিউবওয়েল থেকে গরম পানি বের হওয়া শুরু হয়। গরম পানির পরিবর্তে ঠান্ডা পানি পেতে আবারও দুটি টিউবওয়েল বসানো হয়েছে পরে। সেগুলো থেকেও গরম পানিই পাওয়া গেছে।
নলকূপের মালিক শফিউল আলম বাবু বলেছেন, ‘ঠান্ডা পানি পাওয়ার আশায় উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসে ধর্না দিয়ে ৫৪৫ ফিট গভীর সাব-মার্সিবল পাম্প বসিয়েছি।
তবু ঠান্ডা পানি পাওয়া যাচ্ছে না। বরং আগের কম গভীরতার নলকূপের চেয়ে এ গভীর টিউবওয়েল থেকে আরও বেশি গরম পানি বের হচ্ছে। এ পানি খেলে অন্য এলাকার পানির মতো স্বাদ লাগে না এবং গন্ধটাও একটু অন্য রকম।’
বাবুর স্ত্রী আদরী বেগম বলেন, ‘ গত বছর আমরা ছাদ পাকা একটি বাড়ি নির্মাণ করি। সেখানে ট্যাঙ্কিতে পানি ওঠানোর জন্য প্রথমে ১৯৫ ফিট গভীর নলকূপ স্থাপন করি। সেটিতে ঠান্ডা পানি না পাওয়ায় পরবর্তীতে ৪৫০ ফিটের গভীর টিউবওয়েল স্থাপন করি।
কিন্তু সেখানেও ঠান্ডা পানি পাচ্ছি না। পরীক্ষা করার জন্য সরকারি অফিস থেকে কয়েকজন অফিসার এসে আজ পানি নিয়ে গেছেন। অনেক লোক এসে বলছেন, এখানে গ্যাস আছে, তাই আমরা ভয়ে সেই পানি দিয়ে কিছুই করছি না। মানুষ এসে মোটরের সুইচ অন করে পানি বের করে ছুঁয়ে দেখে যায়।’
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক জয়নাল ইসলাম বলেন, ‘বাবু ভাইয়ের বাড়ির সামনের এই গভীর টিউবওয়েল চালু করলে প্রথম এক থেকে দুই মিনিট পানি হাতে ছোঁয়া যায়।এর পরেই ফুটন্ত পানির মতো গরম পানি বের হতে থাকে।’
মন্ডল পাড়ায় কত দিন থেকে গরম পানি আসছে জানতে চাইলে মিলন নামের এক গ্রামবাসী বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই দেখছি, আমাদের গ্রামের টিউবওয়েলে গরম পানি বের হয়।’
চন্দনপাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি বেশ কছিুদিন থেকে শুনছি। গতকাল সেখানে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি আসলেই সেখানকার পানি যেন ফুটন্ত গরম।
এখানকার পানি দূষিত কিনা বা এখানকার মাটির নিচে প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে কিনা, তা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চলছে জল্পনা-কল্পনা।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রংপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী পঙ্কজ কুমার সাহা।
তিনি বলেছেন, ‘রংপুরে এটি নতুন সমস্যা। জিওলজিক্যাল সমস্যার কারণে এটি হতে পারে। আমরা ল্যাব টেস্টের জন্য পানি নিয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’