বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৩:২১ অপরাহ্ন

জরুরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি:
কুষ্টিয়া পোস্ট ডট কমের জন্য সারা দেশে জরুরী ভিত্তিতে বিভাগীয় প্রধান, জেলা, উপজেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা career@kushtiapost.com ইমেইল এ সিভি পাঠাতে পারেন।

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে মুজিবনগরে

মেহেরপুর প্রতিনিধিঃ

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল। তৎকালীন বৈদ্যনাথতলায় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধ শেষে এ সরকারের নেতৃত্বেই দেশ স্বাধীন হয়। এরপর তৎকালীন বৈদ্যনাথতলা হয়ে যায় আজকের মুজিবনগর। মুজিবনগরকে গুরুত্ব দিয়ে সেখানে তৈরি করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নানা স্থাপনা। দেশ বিদেশের দর্শনার্থীরা সেখানে আসেন মুক্তিযুদ্ধের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ও স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরতে সম্প্রতি এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। নকশার কাজও শেষ হয়েছে।

এদিকে, আজ পালিত হবে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। এ উপরক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

স্থানটিকে গুরুত্ব দিয়ে সেখানে স্মৃতিসৌধ ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নানা ভাস্কর্য। নির্মাণ করা হয়েছে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ মানচিত্র। এতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পুরো মুক্তিযুদ্ধকে। রয়েছে বিশাল আম্রকানন।

নতুন এ নকশাটি তৈরি করেছেন স্থাপত্য অধিদপ্তরের নির্বাহী স্থপতি নূর শাহরিয়ার বিন। তিনি বলেন, ‘মুজিবনগরকে স্বাধীনতার তীর্থভূমি হিসেবে গড়ে তুলতে সম্প্রতি এক হাজার কোটি টাকার বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী। গড়ে তোলা হবে একটি পূর্ণাঙ্গ মুক্তিযুদ্ধ চত্বর। ইতিমধ্যে ৩৪ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। শেষ হয়েছে নকশার কাজও। যেখানে থাকবে একটি বিশাল লেক। লেককে ঘিরে গড়ে তোলা হবে একাধিক স্থাপনা। প্রবেশদ্বারে তৈরি করা হবে বঙ্গবন্ধু চত্বর। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য পেছনে থাকবে জাতীয় চার নেতা। যাতে দর্শনার্থীরা প্রবেশ করেই স্যালুটের মাধ্যমে শপথ বাক্য পাঠ করে ভেতরে যেতে পারেন।’

স্থপতি নূর শাহরিয়ার বিন আরও বলেন, ‘শিশুদের বিনোদনের জন্য শিশুপার্ক, থাকবে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্যানেরোমা, পানির ওপর থিয়েটার। চাকরিতে প্রবেশের পর সরকারি কর্মকর্তাদের প্রথম প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা থাকবে এখানে। একটি শিশু যেন হাঁটার সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধকে জানতে পারে সেই লক্ষ্যে থাকবে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র, রাতের রেজারশো। দিনরাত ভ্রমণের সুব্যবস্থা থাকবে এখানে। প্রতিটি স্থানে সাউন্ডের ব্যবস্থা থাকবে। যেখান থেকে প্রতিনিয়তই প্রচার করা হবে মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিক বিভিন্ন ইভেন্ট।’

এদিকে নকশা তৈরির শেষ পর্যায়ে দায়িত্ব চলে যায় স্থাপত্য অধিদপ্তরের নির্বাহী স্থপতি সালমান বিন কামাল হাতে। তিনি বলেন, ‘আগের নকশাটি আছে। এখানে কোনো কাটছাঁট করা হয়নি।’

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক রফিকুর রশিদ রিজভি বলেন, ‘বাংলাদেশ সৃষ্টির সঙ্গে মুজিবনগরের নাম জড়িয়ে আছে। বঙ্গবন্ধুর নামে জায়গাটির নামকরণ করে তৎকালীন বৈদ্যনাথতলার ওপর পরিয়ে দেওয়া হয়েছে গৌরবের রাজমুকুট। তাই কোনো আশ্বাস নয়, দ্রুত বরাদ্দ দিয়ে নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু করার দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে মেহেরপুর-১ আসনের সাংসদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘মুজিবনগর মানেই বঙ্গবন্ধু। কারণ বঙ্গবন্ধুর নামেই নামকরণ করা হয়েছে মুজিবনগরের। মুজিবনগরের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী ফাঁকা চেক দিয়েছেন। মুজিবনগরকে ঘিরে গড়ে তোলা হবে আন্তর্জাতিক মানের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পর্যটন কেন্দ্র। নকশার কাজ শেষে হয়েছে। চলতি অর্থ বছরেই পাশ হতে পারে ৫০০ কোটি টাকা। পরে বরাদ্দ পাওয়া যাবে আরও ৫০০ কোটি টাকা।’

ঐতিহাসিক ১৭ এপ্রিল উপলক্ষে আজ মুজিবনগরে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে পতাকা উত্তোলন করা হবে। পরে সকাল ৯টার দিকে মুজিবনগরে আসবেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী অ কম মোজাম্মেল হক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক। ৯টা ১০ মিনিটে স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Crafted with by Softhab Inc © 2021
error: আমাদের এই সাইটের লেখা অনুমতি ছাড়া কপি করা যাবে না।