বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৯:২২ অপরাহ্ন

জরুরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি:
কুষ্টিয়া পোস্ট ডট কমের জন্য সারা দেশে জরুরী ভিত্তিতে বিভাগীয় প্রধান, জেলা, উপজেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা career@kushtiapost.com ইমেইল এ সিভি পাঠাতে পারেন।

যেভাবে পাসপোর্ট-বোর্ডিং পাস ছাড়াই বিমানে উঠে বসে জোনায়েদ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি বিমানে পাসপোর্ট- বোর্ডিং পাস ছাড়াই উঠে পড়েছিল জোনায়েদ মোল্লা (১২) নামে এক শিশু। সে বিমানের ভেতরে করিডোরে হাঁটাচলা করছিল। এ সময় কেবিন ক্রু তাকে সিটে বসার পরামর্শ দেন। তখন সে একটি সিটে বসে পড়ে। 

একপর্যায়ে সে যেই সিটে বসেছিল পাশের সিটের যাত্রী তাকে তার বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে বসতে বলেন। কিন্তু জোনায়েদ তার বাবা-মায়ের বিষয়ে কোনো কিছু বলতে পারেনি। পরে জানা যায় সে ওই ফ্লাইটের যাত্রীই নয়। 

গত সোমবার দিবাগত (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ৩টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে কুয়েতগামী কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট (কেইউ-২৮৪) পাসপোর্ট ও বোর্ডিং পাস ছাড়াই বিমানে উঠে পড়ে জোনায়েদ মোল্লা। পরে তাকে নামিয়ে বিমানবন্দর থানা হেফাজতে রাখা হয়। 

জোনায়েদ মোল্লা গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের ইমরান মোল্লার ছেলে। এ ঘটনায় উপজেলায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শিশুটিকে বাড়িতে একনজর দেখতে লোকজন ভিড় করছে।  

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের বাঁশের সাঁকো পার হয়ে জোনায়েদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে অনেক লোকের সমাগম। জোনায়েদকে দেখতে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের লোকজন এসেছেন। এ সময় দোচালা টিনশেডের ঘর থেকে পুরোনো একটি গেঞ্জি ও পাজামা পরে বের হয় জোনায়েদ। জোনায়েদের পরনের কাপড় দেখে মনে হচ্ছিল সে মাদ্রাসার ছাত্র। পরে জিজ্ঞাসা করলে জানা যায়- সে আগে মাদ্রাসার ছাত্র ছিল। পরে তার বাবা মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কেউ কথা বলতে রাজি হননি। এ সময় বাড়ির পাশ থেকে হেঁটে জুনায়েদদের বাড়িতে আসে তার চাচা ইউসুফ মোল্লা। এ সময় কথা হয় তার সঙ্গে। 

শিশুটির চাচা ইউসুফ মোল্লা বলেন, আমার ভাতিজা জোনায়েদ মোল্লা ছোটবেলা থেকেই খুব দুরন্ত। তাকে হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়েছিল। সেখান থেকে সে বার বার পালিয়ে আসে বলে তাকে মাদ্রাসা থেকে এনে স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। জোনায়েদ বাড়ি থেকে মাঝে মধ্যে হারিয়ে যায় আবার একাই ফিরে আসে। গত এক সপ্তাহ আগে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমরা তার খোঁজ পাই। সেখানে গিয়ে জানতে পারি সে সেখান থেকেও পালিয়ে গেছে। বিমানে উঠে পড়ার ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না। বিমানবন্দর থানা থেকে আমাদের ফোন করা হলে তাকে বিমানবন্দর থানা থেকে গতকাল রাতে নিয়ে আসছি। বর্তমানে সে আমাদের বাড়িতেই আছে।  

শিশু জোনায়েদ মোল্লার সঙ্গে কথা হলে সে বলে, আমি বিমানবন্দরের নিরাপত্তারক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্লেনে উঠে পড়ি। আমি কোনো কিছু না বুঝেই শখের বসে প্লেনে উঠে পড়ছিলাম। প্লেনে উঠার পর আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। এজন্য ভেতরে হাঁটাচলা করেছিলাম। 

বিমানে উঠতে বোর্ডিং পাস, পাসপোর্ট এবং ভিসা লাগে তুমি কি জানো- এমন প্রশ্নের জবাবে জোনায়েদ বলে, আমি এইসব কিছুই জানি না। এর আগে কাছ থেকে কখনো প্লেন দেখি নাই। ওইখানে (এয়ারপোর্ট) গিয়ে ভিতরে ঢোকার পর প্লেন দেখতে পেয়ে হাঁটতে হাঁটতে প্লেনের কাছে গিয়ে উঠে পড়ি। 

বিমানবন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক মিয়া জানান, শিশুটি থানা হেফাজতে ছিল। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায়। তার অভিভাবককে খবর দেওয়া হয়। পরবর্তীতে মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে শিশুটির চাচা ইউসুফ মোল্লার নিকট তাকে হস্তান্তর করা হয়।  

মুকসুদপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন , বিমানবন্দর থানা থেকে আমাদের থানায় ফোন করা হলে আমরা তার পরিবারের খোঁজ করে পরিবারকে সংবাদ দেই। সংবাদ দেওয়ার পরে তারা তাকে বিমানবন্দর থানা থেকে নিয়ে আসে। বর্তমানে শিশুটি তার বাড়িতেই আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Crafted with by Softhab Inc © 2021
error: আমাদের এই সাইটের লেখা অনুমতি ছাড়া কপি করা যাবে না।