বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ১০:০৯ অপরাহ্ন
গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
চিকিৎসা সনদ না থাকলেও প্রসূতি, নবজাতক, বয়স্কসহ সব রোগের চিকিৎসা দিচ্ছেন তিনি। অপরিচ্ছন্ন ঝুপড়ি কক্ষে বসে দিচ্ছেন চিকিৎসা। পাশে অপেক্ষমাণ রয়েছেন নারী, শিশুসহ বেশ কজন রোগী। যাদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন তাদেরও চিকিৎসা দিচ্ছেন তিনি। সামনে বসিয়েছেন ফার্মেসি। মালিকানা দাবি করলেও নিজের নামে কাগজপত্রও দেখাতে পারেননি তিনি। এমন হাতুড়ে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় প্রায়শ রোগীদের সমস্যা হলেও তিনি রয়েছেন বহাল তবিয়তে।
নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসদরের চাঁচকৈড় দুধবাজারে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে হয়রত আলী (৪৮) নামের যুবক ৫ বছর ধরে দিচ্ছেন অপ-চিকিৎসা।
চাঁচকৈড় বাজার পাড়া মহল্লায় বাসিন্দা ওই কথিত চিকিৎসকের অপ-চকিৎসার তথ্য সংগ্রহে গেলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে অশোভন আচরণ করে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। তার স্বজন পরিচয়দানকারী বেসরকারি টেলিভিশন সাংবাদিক দাবি করা একজনকে দিয়ে মুঠোফোনে গালমন্দও করেন।
চাঁচকৈড় খামার নাচকৈড় মহল্লার সামসুল হক জানান, হজরত আলী চাঁচকৈড় বাজারে এক ফার্মেসি দোকানে বেশ কবছর কর্মচারী ছিলেন। মালিকের মৃত্যুর পর সেই কর্মচারী এখন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সেজেছেন। তাঁর বড়ভাই ড্রাইভার লাভলু হযরতের ভুল চিকিৎসায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মৃত্যু শয্যায়। তিনি ওই ভুয়া চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চিকিৎসা নিতে আসা গর্ভবতী মহিলার স্বজন জানান, ডাক্তার না হলেও হজরত আলীর চিকিৎসায় অনেকে সুস্থ হয়েছেন। এটা শুনেই তারা চিকিৎসা নিতে এসেছেন।
অভিযুক্ত কথিত চিকিৎসক হজরত আলী জানান, তিনি চিকিৎসা দিতে পারেন কি না, চিকিৎসা সনদ আছে কিনা সেটা সাংবাদিকরা জানার অধিকার রাখেন না। আর সংবাদ হলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম জানান, হজরত আলী চিকিৎসক কিংবা ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশান) দিতে পারেন কি না এ বিষয়ে তাঁর কাগজপত্র যাচাই শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা সিভিল সার্জন মশিউর রহমান জানান, হজরত আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাঁর অপ-চিকিৎসার শিকার ওই রোগীর স্বজনদের লিখিত অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেন তিনি।