বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
হাইতির প্রধান বন্দর থেকে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের একটি ত্রাণবাহী কনটেইনার লুট করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠী। শনিবার (১৬ মার্চ) সংস্থাটি জানায়, দেশটিতে গ্যাং সহিংসতার মধ্যে রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স বন্দর থেকে ওই কনটেইনার ছিনতাই হয়।
১৭ মার্চ, রবিবার এক প্রতিবেদনে ডয়েচে ভেলে জানায়, সংস্থাটির ১৭টি কন্টেইনারের মধ্যে একটি কন্টেইনার ছিনতাই হয়েছে। কন্টেইনারটিতে মাতৃত্বসেবা, নবজাতক এবং শিশুর বেড়ে ওঠার মতো প্রয়োজনীয় সামগ্রী মজুত ছিল।
ইউনিসেফ জানায়, পোর্ট-ঔ-প্রিন্স বন্দরে তাদের ত্রাণের ১৭টি কনটেইনার এসেছে। সেগুলো থেকে একটি লুট হয়েছে।
ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশ হাইতিতে অনেকদিন ধরেই রাজনৈতিক ও মানবিক সংকট চলছে। যার সমাধান না হওয়ায় এর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশটির অর্থনীতিতে। সশস্ত্র বিভিন্ন গ্যাং বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন অংশের নিয়ন্ত্রণ করছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা থেকে বলা হয়, এসব গ্যাং গণহারে হত্যা, অপহরণ ও ধর্ষণ করছে।
এই সংকটের জেরে রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের কিছু অংশে ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত মৃত্যু বাড়তে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছিল জাতিসংঘের এই সংস্থাটি।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, সেখানে প্রতি চারজন মহিলার মধ্যে একজন মৌলিক স্বাস্থ্যসেবার বাইরে।
ইউনিসেফের হাইতি প্রতিনিধি ব্রুনো মায়েস এক বিবৃতিতে বলেছেন, শিশুদের জীবন রক্ষার জন্য জরুরি ত্রাণ সরবরাহ লুটপাট অবশ্যই দ্রুত বন্ধ করতে হবে।
চলতি সপ্তায় হাইতির অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি জানান যে একটি ক্রান্তিকালীন কাউন্সিল চালু হলে তিনি পদত্যাগ করবেন।
এর আগে হাইতির বিভিন্ন গ্যাং দলের সদস্যরা মিলে হেনরিকে পদত্যাগে বাধ্য করতে পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রায় ৮০ ভাগ দখল করে। সশস্ত্র দলের সদস্যরা রাজধানীর প্রধান কারাগারসহ সরকারি বেশ কয়েকটি ভবনে হামলা চালায়। এতে কারাগার থেকে ৪ হাজার বন্দি পালিয়ে যাওয়াসহ কয়েকজন নিহত হন।
নিরাপত্তাজনিত কারণে কয়েকটি হাসপাতাল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শুধু দুটি অস্ত্রোপচার অপারেটিং বিভাগ চালু ছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ স্বল্পতা, জ্বালানি এবং চিকিৎসা সামগ্রির অপর্যাপ্ততায় এই হাসপাতাল দুটোর কার্যক্রম ভালভাবে চালানো সম্ভব হচ্ছিল না বলে জানায় সংস্থাটি।
সহিংসতার কারণে ৭ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া রাজধানীর প্রধান বন্দরের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হাইতির বড় একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে নানা সশস্ত্র গ্যাং। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, এক কোটি ১০ লাখ মানুষের এই দেশে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন মাত্র নয় হাজার। রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স এর রাস্তায় পোড়া বাস এবং ব্যারিকেডের সংখ্যা বেড়েছে। সহিংসতা এড়াতে বহু মানুষ বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন।