সেলুনে চলবে সুন্নতি আর আর্মি কাটিং, অন্যথায় ব্যবস্থা!

ভোলা প্রতিনিধিঃ

সুন্নতি কাটিং, ডিফেন্স অথবা আর্মি কাটিং ছাড়া অন্য কোনো স্টাইলে চুল কাটলে সেলুন মালিক ও কারিগরদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যাবস্থা নেয়ার নোটিশ জারি করেছেন এক ইউপি চেয়ারম্যান। এমন বিজ্ঞপ্তি জারি করে ইউনিয়নের সর্বস্তরে পোস্টার লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।

এর প্রতিবাদ করায় এক কিশোরকে মারধর করার অভিযোগও উঠেছে ওই চেয়ারম্যানের ছেলে তুষারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নে। আর ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন হাওলাদার গত ২৫ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তিটি জারি করেন।

এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা সমালোচনা ঝড়। বাংলাদেশ সংবিধানের ৩১ ও ৩২ ধারা লঙ্ঘন করে মানুষের জীবন ও ব্যাক্তিস্বাধীনতার অধিকার ক্ষুন্ন করে এমন নোটিশ জারি করায় এর প্রতিবাদে সোচ্চার স্থানীয় ছাত্র সমাজ ও সচেতন মহল।

ফলে নিজের ভুল বুঝতে পেরে বুধবার বিকেলে ক্ষমা চেয়ে ওই নোটিশ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন হাওলাদার।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এতদ্বারা জানানো যাচ্ছে যে, ১৪ নং জাহানপুর ইউনিয়নের সকল সেলুন দোকান মালিক ও কারিগরদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে সুন্নতি কাটিং, ডিফেন্স/আর্মি কাটিং ব্যতিত অন্য কোনো কাটিং দেয়া হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ায় বুধবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে নিজের ভুল স্বীকার করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন হাওলাদার।

ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, সেলুনে যে নোটিশ দিয়েছি তা আইনি প্রক্রিয়ার বহির্ভূত হয়েছে। আমি ক্ষমা প্রার্থী। কিছু মুরব্বির কথায় দিয়েছিলাম। তুলে নিয়েছি নোটিশ।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন হাওলাদার বলেন, ইয়াং ছেলেদের চুলের স্টাইল ও কালার করার বিষয়ে স্থানীয় মুরুব্বিরা আমার কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেন।

আমি কয়েকজনকে চুল কাটার বিষয়ে বুঝিয়েছি। কিন্তু তারা তা না মানায় আমি স্থানীয় মুরব্বিদের সঙ্গে কথা বলে ২৫ অক্টোবর নোটিশ জারি করি। তবে এটা আইনবহির্ভূত আমার জানা ছিলো না।

বিষয়টি আমি নিশ্চিত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার দিয়ে প্রতিটা নোটিশ তুলে নিয়েছি এবং আমার ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়েছি।

কিশোরকে মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার ছেলে তুষারের সঙ্গে স্থানীয় জসিমের ছেলের চুল কাটা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে। আমি জানতে পেরে অভিভাবক ডেকে মিটমাট করে দিয়েছি।

এ বিষয়ে চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নোমান রাহুল বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান এরকম নোটিশ জারি করতে পারে না। এতে তিনি মানুষের রুচিশীলতা ও ব্যাক্তিস্বাধীনতা ক্ষুন্ন করেছেন।