বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ১০:৪৩ অপরাহ্ন

জরুরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি:
কুষ্টিয়া পোস্ট ডট কমের জন্য সারা দেশে জরুরী ভিত্তিতে বিভাগীয় প্রধান, জেলা, উপজেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা career@kushtiapost.com ইমেইল এ সিভি পাঠাতে পারেন।

বড়শিতে চলে সংসার

পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের কাঁঠালপাড়া গ্রামের শতাধিক পরিবারের সদস‌্যরা কচুপাত্রা নদীতে বড়শি ফেলে মাছ শিকারের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

এখন নদীতে মাছ কম থাকায় উপার্জন কমেছে। খেয়ে না খেয়ে চলছে তাদের সংসার। ফলে, অনেকেই পেশা পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কচুপাত্রা নদীতে ভাসছে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা। প্রতিটি নৌকায় একজন কিংবা দুজন জেলে একাধিক চিকন লাঠির মাথায় সুতা বেঁধে পানিতে বড়শি ফেলে বসে আছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন মাছের আশায়।

কারও বড়শিতে গোলশা, বগনি, কোড়াল, গাগড়া, পাঙ্গাশ, রুই, কাউন, পোয়া, বাইলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা দিচ্ছে। অনেক জেলে আবার বড় আকারের মাছও পাচ্ছেন। বড়শিতে পাওয়া মাছ পার্শ্ববর্তী কলাপাড়া বাজারে বিক্রি করবেন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে।

দিনে দিনে নদীতে মাছ কমে যাওয়ায় বড়শিতেও মাছ ধরা পড়ছে কম। ফলে, কাঙ্ক্ষিত উপার্জন হচ্ছে না। ইতোমধ্যে অনেক জেলে পেশা পরিবর্তন করেছেন, অনেকে করতে চাচ্ছেন। যারা পেশা পরিবর্তন করতে পারছেন না, তারা জেলে কার্ডসহ সরকারি ভাতার দাবি জানিয়েছেন।

কাঁঠালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৎস্যজীবী আবদুল হামিদ সরদার বলেন, ‘তিন বছর ধরে এখানে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করছি। এখন পর্যন্ত জেলে কার্ড পাইনি। গত বছর মৎস্য কর্মকর্তা এসে নাম নিয়ে গেছেন, এখন পর্যন্ত কোনো খবর নেই।’

মাছ শিকারে আসা শারীরিক প্রতিবন্ধী জালাল ফকির বলেন, ‘সংসার চালাতে নৌকায় বসে বড়শি দিয়ে মাছ ধরি। অন্য কোনো কাজ করতে পারি না। এখন নদীতেও তেমন মাছ পাই না।’

কাঁঠালপাড়া গ্রামের রিকশাচালক ছলেম উদ্দিন জানান, আগে তিনিও বড়শি দিয়ে মাছ ধরতেন। তখন বড় আকারের মাছ ধরা পড়ত। এখন আর তেমন মাছ নেই। তাই তিনি মাছ ধরা ছেড়ে দিয়ে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

নীলগঞ্জ ইউনিয়নের চায়ের দোকানি রাজ্জাক মিয়া জানান, তিনি তিন বছর আগেও বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করে ৫ সদস্যের পরিবার চালাতেন। মাছের পরিমাণ কমে যাওয়ায় তিনি এখন চায়ের দোকান দিয়েছেন।

চাকামইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির কেরামত হাওলাদার বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের মৎস্যজীবীদের সম্পর্কে আমি অবগত আছি। সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা এলে তাদের দেওয়া হবে।’

কলাপাড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে বর্তমানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর (কাঁসারি, বাঁশ ও বেত শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব‌্যক্তি, কামার, কুমার, তাঁতি, নাপিত, বাউল শিল্পী) ১০টি পেশার মানুষের ওপর জরিপ চলছে। তাদের মধ্যে জেলেদেরও অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।

কলাপাড়া উপজেলার জ‌্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, জেলে কার্ড দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সরকারি কোনো বরাদ্দ এলে জেলেদের সহয়তা করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Crafted with by Softhab Inc © 2021
error: আমাদের এই সাইটের লেখা অনুমতি ছাড়া কপি করা যাবে না।