বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৫:২৫ অপরাহ্ন

জরুরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি:
কুষ্টিয়া পোস্ট ডট কমের জন্য সারা দেশে জরুরী ভিত্তিতে বিভাগীয় প্রধান, জেলা, উপজেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা career@kushtiapost.com ইমেইল এ সিভি পাঠাতে পারেন।

অভিযান-১০ লঞ্চের দুই চালক কারাগারে

নিজিস্ব প্রতিবেদকঃ

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে করা মামলায় লঞ্চটির দুই চালককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন- লঞ্চের ইনচার্জ চালক মো. মাসুম বিল্লাহ ও দ্বিতীয় চালক আবুল কালাম।

রোববার নৌ-আদালতের বিচারক স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাব বেগমের আদালতে তারা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রসিকিউটিং অফিসার বেল্লাল হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন নৌ-অধিদপ্তরের প্রসিকিউটিং অফিসার বেল্লাল হোসাইন। তিনি আসামিদের জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ইঞ্জিন রুমের সার্বিক দায়িত্ব ইঞ্জিন চালকদের ওপর বর্তায়। তারা কেবল দায়িত্বে অবহেলাই করেননি, অগ্নিকাণ্ডের পর তাদের ভূমিকা ছিল ধৃষ্টতাপূর্ণ।

ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। তারা যদি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তদারকি করে সঠিকভাবে ইঞ্জিন রুম পরিচালনা করতো তাহলে হয়তো স্মরণকালের এই ভয়াবহ ট্রাজেডি ঠেকানো যেতো। কিন্তু তারা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেননি।

আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, আসামিরা দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সাধ্যমতো চেষ্টা করেও সফল হননি। এতে তাদের অবহেলা ছিল না।

গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি লঞ্চের মালিক মো. হামজালাল শেখকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে সূত্রাপুর থানার ওসি মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার পায়তারা করছেন বলে আসামিপক্ষের আইনজীবী অভিযোগ করেন।

তিনি ওসির বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারির অনুরোধ করেন।

এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর একই আদালতে লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার মো. রিয়াজ সিকদার ও দ্বিতীয় মাস্টার মো. খলিলুর রহমান আত্নসমর্ন করে জামিনপর আবেদন  করেন। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

তার আগে গত ২৬ ডিসেম্বর একই আদালতে নৌ-অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক মো. শফিকুর রহমান স্পেশাল মেরিন আইনের ৫৬/৬৬ ও ৭০ ধারায় অভিযোগ এনে আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত মামলা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- লঞ্চের মালিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল আরাফ অ্যান্ড কোম্পানির চার মালিক মো. হামজালাল শেখ, মো. শামিম আহম্মেদ, মো. রাসেল আহাম্মেদ ও ফেরদৌস হাসান রাব্বি। এছাড়া লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার মো. রিয়াজ সিকদার, ইনচার্জ চালক মো. মাসুম বিল্লাহ, দ্বিতীয় মাস্টার মো. খলিলুর রহমান ও দ্বিতীয় চালক আবুল কালাম।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২৩ ডিসেম্বর আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টার দিকে সদরঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে এমভি অভিযান-১০ বরগুনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। লঞ্চটি ঝালকাঠির নলছিটি থানা এলাকা অতিক্রম করার পর রাত আনুমানিক ৩টায় ইঞ্জিন রুমে আগুনের সূত্রপাত হয়।

পরে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর লঞ্চঘাটের অনেক আগেই জাহাজে থাকা যাত্রীদের অনেকে নদীতে লাফ দেন। আগুনে কেবিনসহ সবই পুড়ে যায়।

ইনচার্জ মাস্টার, ইনচার্জ ড্রাইভার ও সেকেন্ড ড্রাইভার আগুন নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ না নেওয়ায় ৪২ জন যাত্রী পুড়ে মারা যান। আনুমানিক ১৫০ জন যাত্রী দগ্ধ হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

নৌযানটিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, লাইফ বয়া, বালির বাক্স ও বালতি ছিল না। ইঞ্জিন রুমের বাইরে অননুমোদিতভাবে অনেকগুলো ডিজেলবোঝাই ড্রাম ও রান্নায় ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার ছিল বলে মামলায় অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Crafted with by Softhab Inc © 2021
error: আমাদের এই সাইটের লেখা অনুমতি ছাড়া কপি করা যাবে না।